আর দশটা সাধারণ দিনের মতই বাজছিলো ফোনটা। মিলি তখন সূরা বাকারা ছেড়ে দিয়ে কেবল রসুনগুলি নিয়ে বসেছে। শুভ্র হলুদাভ কোয়াগুলি একে একে সব খোসাছাড়া হয়ে এপাশে এসে না জমা হওয়া পর্যন্ত অস্থির লাগতে থাকে ওর। এর মাঝে অন্য কোনো কাজে হাত দিতে চায় না।
সেদিন অশরীরী কোনো কণ্ঠ যেন ওর ভিতর থেকে গুড় গুড় করে বলে উঠলো, এ ফোনটা ধরো মিলি। এ ফোনটা ধরা তোমার খুব দরকার।
পরের কয়েক ঘন্টা মিলি অনেক ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে পেরেছে। এখন মনে হলে ওর অবাক লাগে। ডিউটি অফিসার এসে পৌঁছানোর মধ্যে প্রতিবেশী ভাবীকে জানানো, আধাখেঁচড়া রসুনগুলি বক্স এ করে ফ্রিজ এ রাখা। বাবুকে ভাল করে খাইয়ে নেয়া, না জানি কতক্ষন পুলিশ স্টেশন, হসপিটাল করতে হয়!
জামানের রোড একসিডেন্টের খবরে ওর মনে হচ্ছিলো হেলান দিয়ে ছিল যে পিলার এ হঠাৎ সে পিলারটা নাই হয়ে গেছে, আর ও এক আশ্চর্য অপাংতেয় অবস্থায় পড়ে গেছে।
কান্নাটা ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়লো, যখন পাশের বাসার ভাই ফিউনারেল সম্পর্কিত বিষয়াদির ব্যাপারে ওর ডিসিশন জানতে চাইলো। মানুষটা সবসময় তাকে বুঝিয়ে এসেছে ডিসিশন মেকিং ওর ডিপার্টমেন্ট না, সে ঠিকঠাক সংসারটা দেখে রাখতে পারলেই হবে।
মিলির হঠাৎ করে খুব ফাঁকা লাগছিলো। জামানের জন্য ভালোবাসা বোধ থেকে যে এ কান্না আসছে না সেটা ভেবে ও খুব অপরাধবোধে ভুগছিল।
ওদের সম্পর্কটাকে কষ্টের বলা যায়না কোনোমতেই।
ওর কাছে সম্পর্কটা বরং ওই স্বচ্ছ, উইন্টারে জমে যাওয়া হ্রদের মতো। এখানে খুব সুন্দর কিছু হ্রদ আছে। এক উইকেন্ডে অনেক বলার পরে নিয়ে এসেছিলো জামান। সারাটা সময় গাড়িতে বসে কাজই করলো লোকটা। একটা বিকাল নষ্ট করা মানে তার পড়াশোনার বাধা সময়টা আরো পিছানো যে!
জমে যাওয়া হ্রদগুলোতে থাকেনা ছোট ছোট তিরতিরে বাতাসের ঢেউ, বা ঝড়ো হাওয়ার উত্তাল পানি। সাঁতার কাটেনা হাঁসেরা।
ছোট্ট একটা বাসা, ছোট্ট সাদা গাড়ি, জামানের ইউনি থেকে ফেরা, মিলির খাবার বেড়ে দেওয়া, সবই ছিল। ছিল না কেবল ভালোবাসাবাসির আদেখেলপোনা বা মান-অভিমান এর অদরকারি পর্বগুলো। স্বচ্ছ জমে যাওয়া কাঁচের হ্রদের মতো একটা আদর্শ পরিবার ওদের ছিল!
আস্তে আস্তে অনেক কিছুই সামলে উঠতে পারলো মিলি। নিজের ভেতর যে এতো শক্তি সুপ্ত ছিল, ওর জানা ছিল না। ড্রাইভিংটা শিখে ফেললো ইন্ডিয়ান সিস্টার এর কাছ থেকে। এখন বুক ধক ধক করা আগের টেনশন গুলি আর হয়না।
একটা তরকারি, দুটা চাল ফুটিয়ে নিলেই চলে। খেলেও তিন দিন নিমেষে চলে , না খেলেতো চলেই যায়।
মাঝে মাঝে সেই ফাঁকা ভাবটা ফিরে আসে। কোনো তাড়া নেই। দিনশেষে কারও ফেরার অপেক্ষা নাই।
শনিবারটাই বরং ভালো যায়। মসজিদের হালাকায় যায়, কতজনের সাথে দেখা হয়! কতরকম মানুষ!
খালি পরিচিত কোনো বোন অপ্রত্যাশিত প্রস্তাবগুলি না আনলেই হাফ ছেড়ে বাঁচে ও। ঘাড়ের পেছনটা গরম লাগতে থাকে অস্বস্তিতে। “সরি সিস্টার , আই ডোন্ট হ্যাভ এনি প্ল্যানস রাইট নাও”, বলে কোনোমতে বেড়িয়ে আসে।
জীবনটা একটা মিস্ট্রী মেইজ মনে হয়। যে গলিতেই সে গেছে , একটা সময় পর জানা গেছে ওটা আসলে কানাগলি। সামনে বন্ধ। নো থ্রু রোড!
আল্লাহ তাকে অপরূপ সৌন্দর্য, মেধা বা গুণ খুব দিয়েছেন কিনা বুঝে পায়না ও , কিন্তু শান্ত একটা জীবনবোধ ওর সবসময় ছিল, সে জন্য সে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। যতবার ভিতরের আমি থেকে “কেন? ” “আমার সাথেই কেন? প্রশ্নটা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে চেয়েছে, ওটার টুটি চেপে ধরতে পেরেছে ও।
মিস্ট্রী মেইজ এর শেষেটায় একজন ওকে পৌছে দিবেনই এ বিশ্বাস কেমন করে যেন টিকে থেকেছে ওর এই বোধে।
দুপুরবেলা বারান্দার খাঁ খাঁ রোদ দেখেই কেটে যায় ওর। বাবুও যেন আজকাল খুব শান্ত হয়ে গেছে , পড়ে পড়ে মেলাখন ঘুমায়। এসময়টা অদ্ভুতুড়ে ওই পাখিটার একটানা টরর টরর আওয়াজ ছাড়া আর কোনো আওয়াজ থাকেনা। আকাশ পাতাল ভাবতে থাকা মিলি দরজায় হঠাৎ নক শুনে তাই চমকে যায়। এ সময় কারোর তো আসার কথা না!
টিইইট টিইইট করে একটা ভ্যান ব্যাকে দেয়ার সাউন্ড শুনে বুঝতে পারে পোস্টের লোক এসেছে ডেলিভারি দিতে।
তাড়াতাড়ি নিকাবটা পরে নেয় , কী হ্যাঙ্গারেই ঝুলিয়ে রাখে একটা নিকাব যাতে কেউ এলে চট করে পরে নেয়া যায়। দরজা হালকা ফাঁক করে জিনিস নিয়ে সাইন করে দেয় ও প্রতিবার।
এবার লোকটাকে ভিতরে আসতে হলো , কারণ জামানের অর্ডার করে যাওয়া প্রিন্টার এসে পৌঁছেছে বিশালাকায় বক্সে । প্রিন্টিং এ অনেক সময় বাইরে নষ্ট হতো বলে এটা অর্ডার করেছিল ওর জামাই, যাতে কাজে আরো দ্রুত আসে!
এখন প্রিন্টার আসলো তো মানুষটাই নাই আর।
“ক্যান ইউ প্লিজ সাইন হিয়ার ? “
কাজটা করতে গিয়ে নির্দোষ একটা আচমকা চাহনি পড়লো ডেলিভারি ম্যানের উপর।
যেন পাথর হয়ে গেলো মিলি।
এ চেহারা তো সে চিনে!
এ চাহনি যে সে কোনো দিন ভুলবেনা!
সন্ত্রস্ত এক জোড়া চোখ, উদ্ভ্রান্ত আর ভয়ার্ত আদলে এ মুখটাই তো , অনেক আগের একটা দিনে তার কাছে চেয়েছিলো একটু আশ্রয়।
পার্থক্য কেবল সেদিন সে মুখটা ছিল মসৃন আর আজ সেখানে ঘন ছায়া সুনিবিড় দাড়ি।
কি সাইন করলো কে জানে, দরজা বন্ধ করার আগে লোকটা ইতস্তত মুখে কিছু যেন জিজ্ঞেস করতে নিল… “আর ইউ ফ্রম…?
ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দিলো মিলি। সন্তর্পনে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে নিঃশাস বন্ধ করে শুনতে চেষ্টা করলো লোকটা চলে যাচ্ছে কিনা। খানিক নিস্তব্ধতার পর
ইগনিশন গর্জে উঠার আওয়াজে রেহাই পেলো ও।
ওখানেই বসে পড়লো। হুড়মুড় করে স্মৃতিরা সব ভীড় করে যেন জম্বির মতো এগিয়ে আসছে ওর দিকে। মানুষের জীবনটা এমন কেন? যেন একটা মিস্ট্রী মেইজ এর গোলকধাঁধা , অনেক পথ ঘুরে কেউ যেন তাকে আবার আগের একটা জায়গারই মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিলো।
ক্যাম্পাসের লেডিস রুমে জোহরের জন্য রেডি হচ্ছিলো ও সেদিন। প্রচন্ড গরমের পর একটু পানির ঝাপ্টা , গলায় মাথায় মুখে অনেক রিফ্রেশ করে দেয়। হঠাৎ প্রচন্ড হই হল্লার শব্দে তড়িঘড়ি করে সব পরে নিল আবার। শব্দ স্পষ্ট হতে হতে এ দিকেই আসছে না?
মনে হয় সেই কুখ্যাত গ্রূপগুলোর মারামারি লেগেছে আবার।
দরজাটা যেন ফেটে পড়লো। ভিতরে ঢুকলো ছেলেটা। তীর বাধা মৃগের মতো কাঁপছিলো সারা ক্যাম্পাস তটস্থ করে রাখা কুখ্যাত নির্ভিক নেতাটি। একটা কথাই খালি বলতে পারলো মিলিকে উদেশ্য করে । “প্লিজ, ওরা মেরে ফেলবে আমাকে।”
সবচে শেষের টয়লেটে ঢুকে সে কমোডের কোনায় বসে পড়লো , যেন দেয়ালের মধ্যে ঢুকে যেতে পারলে আরো নিশ্চিন্ত হতো।
মুহূর্ত গুলি এখন কত ক্লিয়ার স্লো মোশনে মনে পড়ছে ওর , অথচ তখন যেন সাই সাই করে চেঞ্জ হচ্ছিলো দৃশ্যপট। কি করবে ওই মহুর্তে কোনো দিশা পাচ্ছিলো না। বইয়ে পড়া একটা ঘটনা মনে পড়ছিলো শুধু।
মানুষ দু’টি গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন, মাকড়সার জাল আর পাখির বাসা দেখে ফিরে গিয়েছিলো শত্রূর দল।
ব্যাগ থেকে পাউডার বের করে ছিটিয়ে দিলো পুরো ফ্লোর এ , যেন হটাৎ করে পড়ে গেছে! ছড়িয়ে দিলো চিরুনি, পানির বোতল আর ব্যাগটাও।
উপুড় হয়ে ওগুলো যখন তোলার ভঙ্গি করছিলো তখনই ঢুকলো অস্ত্র সজ্জিত দস্যুগুলো। ওরা দেখলো শুভ্র সাদা পাউডারে নাই কোনো পায়ের ছাপ। আরও দেখলো মিলিকে।
ওর অতিসাধারণ কালো মোটা কাপড়ের আবরণটা , যা তাচ্ছিল্যই কুড়িয়ে এসেছে সবসময় আজ যেন কি এক সম্ভ্রম, সম্মান আর হুঁশিয়ারির অদৃশ্য, অলিখিত পরীখা কেটে দিলো তার আর অস্ত্রধারীদের মাঝে ।
ওর এই সব ছড়ানো ছিটানো ভঙ্গিমা দেখে জড়তার সাথে দলনেতা বলে উঠলো “চল চল এদিকে না,লেডিস দেখছিস না?”
অনেকক্ষণ ওভাবেই বসেছিল ও, ঝড় থামার পর বড় বড় বক্তৃতা দেয়া ছেলেটা বেড়িয়ে এসে কিছুই বলতে পারেনি , ঠোঁটদুটো কাঁপছিলো কেবল, হাত জোড় করে কিছু হয়তো বলার চেষ্টা করছিলো ..আর এক মুহূর্ত দেরি করেনি মিলি।
ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে রিক্সা নিয়ে সোজা বাসার দিকে রওনা করেছিল।
“সেদিন ওই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার পর আগের ছেলেটা আর ছিলাম না আমি । সাক্ষাৎ মৃত্যু আমাকে জীবন সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শিখালো।
আমি খুব সরি আপনাকে যা যা ফেইস করতে হয়েছে এর পরে তার জন্য। আমার কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিলোনা এসবে।”
আড়ষ্ট মুখে বললো ডেলিভারি ম্যান তথা সেদিনের সেই দ্বিতীয় জীবন পাওয়া নেতা।
ইমামের ওয়াইফ এরেঞ্জ করেছে এ মিটিংটা যেটা এভয়েড করার কঠিন চেষ্টা করেছে মিলি, কিন্তু পারেনি। বরং এত ইস্তিখারার পরও কেমন যেন সহজে এগিয়ে যাচ্ছে সবকিছু।
“আমি এ শহরে এসেছি বেশিদিন হয়নি। স্কলারশিপ এর সাথে পার্টটাইম পোস্ট এর জবটাতে ঢুকলাম। যে সার্কেল থেকে বের হয়ে এসেছি তাতে দেশে টেকাই দায় , চাকরি তো দুরের ব্যাপার ! স্কলারশিপ এর জন্য দুয়া করছিলাম খুব। যে রেসাল্ট আমার, পড়াশুনা তো কখনও আসলে আমলে আনিনি , বাট দুয়ায় কি না হয়!”
মিলি নখ খুঁটছে । কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা। চুপচাপ শুনছে শুধু।
“জীবন মৃত্যুর খুব সূক্ষ্ম সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আমি আপনাকে দেখেছিলাম তো , নিকাব অবস্থায়ই, তবু অজস্র কাল নিকাবের মধ্যেও মনে হয় আমি আপনাকে ঠিকই চিনবো। আমার প্রানের বন্ধুরা যে যার মতো পালিয়েছিলো। কিন্তু আপনি কেন সেদিন আমাকে শেল্টার দিয়েছিলেন আমি বুঝিনি। এখন বুঝি, ওটা ছিল আল্লাহর প্ল্যান।
সেদিন ডেলিভারি দিতে যাওয়ার দিন কেন যেন মনে হলো আপনাকে আমি চিনি। মসজিদে রেগুলার আসতাম। ইমামের সাথে কথা বলে জানলাম আপনার ট্রাজেডিটার কথা। সেই সাথে শিওর হলাম ওটা আপনিই। “
মিলির খুব অবাক লাগছে।
এত চেঞ্জ এর কিভাবে হল ভাবতেই অবাক লাগছে। চেঞ্জ যে হচ্ছিলো আশে পাশের ফিসফিসানি থেকে সে ঠিকই শুনতে পেতো, তাই বলে এতটা ? মুকাল্লিবাল কুলুব নামটার যথার্থতা আরেকবার উপলব্ধি করলো সে।
ক্যাম্পাসে সেই ঘটনার পর নেতার এই আস্তে আস্তে চেঞ্জ হওয়াটা সাঙ্গপাঙ্গরা মেনে নিতে পারেনি। সব দোষ যেয়ে পড়ছিলো ওই বোরকাওয়ালীর উপর।
নাটক মুভিতে তখন খুব চলছে হিজাবি মেয়ের সাথে গিটারওয়ালার প্রেমের কাহিনী। মানুষ যেন বাস্তবে জোর করে হলেও এমন একটা কাহিনীর মালমশলা লাগিয়ে নেবার দায়িত্ব নিয়ে নিলো। ঘটনা যা কিছুই না, তাই হয়ে গেলো বিশাল রটনা।
সারা বছর সাবধানে গা বাঁচিয়ে চলা মেয়েটার গায়ে এসে লাগলো অশ্রাব্য সব তকমা।
সেই সময়গুলাতে অনেক কেঁদেছিলো মিলি, খুব করে আল্লাহকে বলছিলো, প্লিজ আমাকে এখন থেকে বাঁচিয়ে নাও।
মিলির ভীষণ বুক কাঁপতো , যেভাবে টক অফ দ্য ইউনি হয়ে উঠছে এ ঘটনা, বাবা মায়ের কানে পৌঁছালে কি বলবে আল্লাহই মালুম। এমনিতেই ড্রেসআপের ব্যাপারে ফ্যামিলি সাপোর্ট পায়নি ও। বরং আরো শুনতে হয় বোরকার নিচেই নাকি সব শয়তানি!
সলাতে সবকিছু ঝাপসা দেখতো সে।
অনার্স ফাইনালের লাস্ট দিনটায় এসেছিলো জামানের বাবা মা , ওদের প্রস্তাবে মা যখন মিলির মতামত জানতে চাইলো, এক মুহূর্ত না করেনি ও সায় জানাতে। এরপর তো চলে এলো সব জঞ্জাল ছাড়িয়ে অনেক দূরে।
“প্লিজ আমার এ প্রস্তাবটিকে আপনি অনুকম্পা বা পে ব্যাক হিসেবে দেখবেন না। এটুকুই আমার অনুরোধ। আমার বিশ্বাসে এটা তাক্বদীর। তাক্বদীরে যা যেভাবে আছে, সেভাবেই হবে।”
লোকটার কথায় ভাবনার জগৎ থেকে যেন সম্বিৎ ফিরে পেলো মিলি।
পরের কয়েকটা দিন কেবল ইস্তিখারা ইস্তিখারায় কাটলো। আকুল হয়ে সে বলছিলো ওর রাব্ব কে , “প্লিজ গাইড মি , আমাকে ঠিক গলিটা দেখিয়ে দিন , প্লিজ!”
আশ্চর্য দ্রুততার সাথে সামারের শুরুতে মসজিদে আড়ম্বরহীন ভাবে ওদের বিয়েটা হয়ে গেলো।
কয়েকটা সামার পরে এক ছুটিতে ওরা গিয়েছিলো একটা ফার্ম হাউসে। বিস্তীর্ণ সবুজ ঘাস , আর কি অবিশ্বাস্য সুন্দর সিনারি। ফার্মের অদূরে টলটলে লেক। বরফ গলে গেছে, মৃদুমন্দ বাতাসে কাঁপছে পানি , উড়ছে পাখিরা আর ভাসছে রংবেরং এর নৌকা!
খোলা প্রান্তর পেয়ে বাচ্চারা যেদিক পারে দৌড় দিলো।
হাসতে হাসতে বাচ্চাদের বাবা বললো , “চলো আমাদেরও একটা রেস্ হয়ে যাক ! ওই যে গেটটা দেখছো , যে আগে ওটা ছুঁতে পারবে সেই ফার্স্ট। “
মিলি ছুটছে।
স্নিগ্ধ কোমল বাতাসের ঝাপ্টা এসে লাগছে ওর চোখে মুখে। ওর কি যে ভাল লাগছে। মিস্ট্রী মেইজের শেষ গেটটা ও দেখতে পাচ্ছে , এই তো ..আরেকটু !
ফাইনালি, আলহামদুলিল্লাহ!
মিস্ট্রী মেইজ
– উম্ম ঈসা
(১৭/০২/২০১৯)