আমি মৃত্যু জিনিসটা খুব ভয় পাই। কবরের কথা ভেবে কতো রাত যে ঘুমাতে পারিনি এখন পর্যন্ত তার ঠিক নাই। জানি মৃত্যু আসবেই এবং আমি এর জন্য এখনও প্রস্তুত না। কিন্তু আমার প্রস্তুত থাকা না থাকা দিয়ে কি আসে যায়? আমি যে কালকেও বেঁচে থাকবো তারই কোনো নিশ্চয়তা নাই।
জীবনের প্রকৃত অর্থটাই আমাদের এখনো বুঝা বাকি। আমরা জানি আল্লাহ আমাদের দুনিয়াতে পাঠিয়েছে পরীক্ষা করার জন্য। কিন্তু আমরা নিজের উন্নতি করার জন্য বা সুখ পাবার জন্য এমন ভাবে উঠে পরে লাগি যে ভুলেই যাই আমরা আসলে পরীক্ষা দিচ্ছি। আমাদের আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত আখিরাতের জন্য ভালো কিছু কামাই করা।
আমাদের সবার জীবন নিয়ে অনেক স্বপ্ন থাকে, আশা থাকে। ভবিষ্যতে একটা ভালো রেজাল্ট করার, ভালো জব পাবার বা ভালো জীবন সাথী পাবার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত ছুটে চলেছি। কিন্তু কাংখিত জিনিসটা পেয়ে গেলেই কি আমাদের চাহিদা মিটে যায়? না! বরং দিন দিন তা বাড়তেই থাকি।
ধরেন আপনার উপর সংসারের ভার। আপনি নিজের চাকরী নিয়ে এতোই ব্যস্ত যে মসজিদে জামাতে সালাত পড়া দূরে থাক, আপনার সালাতই মাঝে মাঝে ওয়াক্ত শেষে পড়া লাগে। এখন এই অবস্থায় আপনি মারা গেলে আপনার জব,উন্নতি, উচ্চ বেতন কিছুই কাজে আসবেনা আর। কিন্তু সালাতটা ঠিকই কাজে দিবে।
অনেকে মেয়েকে দেখেছি বাচ্চা কাঁদে বলে সালাত ঠিক মতো পড়েনা। সংসারের কাজে ব্যস্ত হয়ে অনেক ইবাদত মিস করে। বা অনেকে পরীক্ষা বলে পড়ালেখা নিয়ে এতোই ব্যস্ত থাকে যে সালাত তো পড়েই না, রমজান মাসে রোজা পর্যন্ত রাখেনা!
মুসলিমরা ভবিষ্যতের জন্য বাঁচেনা। তারা বর্তমানে বাঁচে। তারা জানে আজকে, এই মূহুর্তেও আমার মৃত্যু হতে পারে। তাই তারা মিথ্যা বলা, গীবত করা, হারাম কাজ করা, ইত্যাদি থেকে দূরে থাকে। দুনিয়ায় এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে আখিরাতেও যে কাজ উপকারে আসবে সে কাজ করতে থাকে। দুনিয়ার জন্য আখিরাতকে বিসর্জন দেয় না।
আমরা কি হতে পেরেছি এমন মুসলিম? একবারো কি ভেবে দেখেছি গুনাহ করা অবস্থায় আজ যদি আমার মৃত্যু হয় আল্লাহর সামনে কি মুখে দাঁড়াবো? আসুন সবাই নিজেকে প্রশ্ন করি ও নিজের ভুল শুধরে নেই।
মৃত্যু
– নায়লা আমাতুল্লাহ
(১৭/০৪/২০১৯)