ঈদ আনন্দ

“মারঈয়াম হোসেন কই?”

আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ায় মারঈয়াম। এনাম স্যার ক্লাসে ঢুকতেই ওর বুক ধরফর শুরু হয়, আশু অপমানের আশঙ্কায়।

“আপনি বেতন দেন না কেন?”

“স্যার! আব্বু দিবে”। গলা না কাঁপিয়ে বলার চেষ্টা করে মারঈয়াম।

পাশের সারির ছেলেরা দুই একজন ফিরে ফিরে তাকিয়ে হাসে।

“আব্বুই তো দিবে। কিন্তু কবে দিবে। এই সপ্তাহের মধ্যে বেতন ক্লিয়ার করেন।“

মারঈয়ামের কান ঝাঁ ঝাঁ করে। পরের ছাত্রের নাম ধরে ডাকেন এনাম স্যার। মারঈয়াম বসে পড়ে। আব্বুর কাছে যে মারঈয়াম একটা দুই টাকার নোট চাইতেও দ্বিধা করতো ছোটবেলায়, সেই এখন রাগারাগি করে ক্লাসের বেতন তাড়াতাড়ি দেয়ার জন্য। এভাবে প্রতি মাসে অপমান দুঃস্বপ্নের মতো লাগে ওর কাছে।

শুধু বেতন নিয়ে হলেও হতো। সেদিন টিফিন টাইমে বান্ধবীরা দাঁড়িয়ে গল্প করছিল। লিপি ম্যাডাম মারঈয়ামকে সবার সামনে বললেন, “কিরে মারঈয়াম তোর ড্রেসের রঙ জ্বলে গেছে নতুন স্কুল ড্রেস কেন বানাচ্ছিস না। রুচিরও তো একটা ব্যাপার আছে নাকি? তোর বাবা এতো ফিটফাট তুই এমন ক্ষেত কেন রে?” লিপি ম্যাডাম আদর করে সবাইকে তুই করে ডাকেন।

ম্যাডামকে ও কিভাবে বলে, মার কাছে স্কুল ড্রেসের কথাটা বলতে গিয়ে চোখে পানি এনে ফেলেছে ও। শুধু রঙ জ্বলা না, হাতার কাছে বাজে ভাবে ছিড়েও গেছে। ছড়িয়ে ওড়না পরে বলে বোঝা যায় না। কিন্তু সারাক্ষণ অস্বস্তি লাগে এই বুঝি ওড়নাটা সরে গেলো।

আসমার সাথে হেঁটে হেঁটে বাসায় ফিরে মারঈয়াম। গল্প করতে করতে দুইজনেরই সময় কেটে যায়। কখন যে বাসার কাছে চলে আসে খেয়ালই থাকে না। কোনো কোনোদিন একদম গেইটের কাছে এসে সবচেয়ে মজার গল্পগুলো মনে পড়ে। তখন কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে গেইটের সামনে দুজন। এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে একদিন মারঈয়ামের বাবা দেখেছিল। ঝাড়ি খেয়েছিল সেদিন ও।

“এবার ঈদ শপিং করেছিস?”

“না, এখনো করিনি”। শুকনো মুখে জবাব দেয় মারঈয়াম। এই এক যন্ত্রণা ঈদ আসলে। “ঈদ শপিং করেছো?” কুরবানি ঈদে “গরু না খাসি?“ সত্যিটাই বলে দেয় মারঈয়াম। একটু ভেতরে অস্বস্তি লাগে। তবু বলে যে ওরা কুরবানি দিচ্ছে না।

“কয়টা ড্রেস নিবে এবার?” আসমার প্রশ্ন থামেনা।

মুখ শক্ত করে উত্তর দেয় মারঈয়াম, ‘দুইটা’।

বাসার কাছে চলে আসায় আর প্রশ্ন করার সুযোগ দেয় না আসমাকে। বিদায় নিয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচে। নয়তো এতক্ষণে “কোথা থেকে শপিং করবে?” “আমি তো অমুক ব্র্যান্ডের ছাড়া পরিনা“ এসব শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে যেত।

দেলোয়ার হোসেনের একমাত্র আরামের দিন শুক্রবার। সকালের নাস্তা করে শুয়ে শুয়ে পত্রিকা পড়েন। ছোট দুই মেয়ে তার পা টিপে দেয়। তখন তাদেরকে নবী রাসূলের গল্প শোনান। নবী রাসূলের জীবনী থেকে নানা প্রশ্ন করেন। রীতিমত প্রতিযোগিতা করে উত্তর দেয় তার চার আর পাঁচ বছরের পিঠাপিঠি মেয়ে দুটো।

তিন মেয়ে, এক ছেলে আর স্ত্রী নিয়ে টানাটানির সংসারেও পরম শান্তি অনুভব করেন তিনি। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে এটা ওটার জন্যে অভিযোগ আর অনুযোগ লেগেই আছে। তবু রিযিক নিয়ে কোনো আফসোস নেই দেলোয়ার হোসেনের। ছেলেমেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারটা নিশ্চিত করতে চান তিনি।

ছেলেমেয়েরা উচ্চ শিক্ষিত হবে এটাই তার চাওয়া। বড় মেয়েটাকে নিয়ে একটু দুশ্চিন্তা হয় এখন। ক্লাস ফোরে থাকতে একটা বছর পড়েনি। স্কুলে দিতে পারননি তখন, ওই যে একটা গ্যাপ পড়ে গেলো। মেয়েটা অংক আর ইংরেজিতে দূর্বল। পিএসসিতে কোনো রকমে পার হয়ে গেলেও জেএসসি রেজাল্ট কি করবে তাই নিয়ে চিন্তা। অংক আর ইংরেজির জন্য টিচার দিতে পারলে মনে হয় ভালো হত। কিভাবে এই বাড়তি টাকার ব্যবস্থা করবেন তাই ভাবেন তিনি।

মেয়ে তার রুপে গুণে বেশ ভালো। রাস্তায় বের হলে ছেলেরা নাকি কমেন্ট করে ওর মা একদিন বলছিলো। তারপর থেকে মেয়েকে বাইরে বের হলে পর্দা করতে আদেশ দিয়েছেন। প্রথমে একটু তর্ক করলেও মেয়ে ঠিকই শুনেছে। এমনকি বাইরের কেউ বাসায় আসলেও মাথায় ওড়না টানতে ভুলে না। ছোটবেলা থেকে পর্দার কথা না বলায় ভুলই হয়েছে তার। বড় হয়ে আর মানতে ইচ্ছা করে না। বড় বোনকে দেখে ছোট দুইজনও ওড়নার জন্য বাবার কাছে আবদার জুড়ে দিয়েছে।

“সেহরি আর ইফতারের জন্য বাজার করো।“ লিস্ট ধরিয়ে চলে যায় আমেনা বেগম। জুমা’র আগে বাজার সেরে নেওয়ার জন্য মেয়ে দুটোকে ছুটি দিয়ে উঠে পড়েন দেলোয়ার হোসেন। আগামীকাল থেকে রোযা। সবকিছুর দাম কেমন বাড়বে তাই ভেবে ভয় লাগে তার। এক ফাঁকে পাঞ্জাবীটা ইস্ত্রি করে নেন নিজ হাতে। জামা কাপড় কম হলেও যত্ন করে রাখেন তিনি। ফিটফাট থাকতে ভালোবাসেন।

“আম্মু! একটা ফ্রিজ কিনো না। বাইরে থেকে আসলে যেন ঠান্ডা পানি খেতে পারি।“

রান্নাঘর থেকেই ভাই এর বিলাসী আবদার শুনতে পায় মারঈয়াম। ইফতারের ঠিক আগ মূহুর্তে কোত্থেকে যেন এসে হাজির হয়েছে। না সে বাবার সাথে বাজারে যায়, না ঘরের কোনো কাজে হাত লাগায়। ছেলে বলে কি ঘরের কোনো দায়িত্বই তার নেই! আর আছে বিবেকহীন চাহিদা। সেদিন লোডশেডিং দেখে বলছিলো, “আল্লাহ! আমাদের বড়লোক বানায় দাও! জেনেরেটর আছে এমন বাসায় থাকবো।“ ক্লাস সিক্স তো এমন কোনো ছোট ক্লাস না। এমন চিন্তা করে কিভাবে! মারঈয়ামের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।

“কিনবো বাবা কিনবো। আর কয়টা দিন ধৈর্য ধরো”। আমেনা বেগম সান্তনা দেন ছেলেকে। ছেলেটা তার খুব ভদ্র। মেয়ের মতো জেদি হয়নি। মাঝে মাঝে এটা ওটা আব্দার করে ঠিকই। কিন্তু জিদ করে না কখনো।

প্রথম সন্তান মেয়ে হওয়ায় স্বামীর থেকে কথা না শুনলেও শশুড়বাড়ির কথা ঠিকই শুনতে হয়েছে তার। প্রায় তিন বছর পর যখন ছেলেটা হল স্বস্তি পেয়েছিল সে। এই তিনটা বছর অনেক কালো মুখ দেখেছে। সন্তান হওয়াও জ্বালা, না হওয়াও। তার তিন নম্বর বাচ্চার সময়ই সবাই খুব বিরক্ত ছিল। স্বামীর আয় এতো কম, বাচ্চা নিচ্ছে কেন। খুশী মনেই ছিলেন তিনি। খাদিজার জন্মের সময় এসব কথা আমলে নেননি।

কিন্তু ফাতিমার সময় আর পারেননি। খাদিজার যখন ৬ মাস তখন ফাতিমা পেটে আসে। ওই সময় চাকরি চলে গিয়েছিল ওদের বাবার। বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল সবাইকে। ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন মুখ কালো করে। নিঃসন্তান ডাক্তার বললেন, ”ভাবী আমরা বাচ্চা চাচ্ছি, নেই। আর আপনি আল্লাহ্‌র এতো বড় নিয়ামতে মন খারাপ করছেন?” ডাক্তারের কথায় তার মন ভালো হয়নি।

ছোট ছোট তিন বাচ্চা নিয়ে বাপের বাড়ি উঠেছেন। ভাই বোন কথা বলতে ছাড়ে না। মা রান্না থেকে শুরু করে ঘরের বেশিরভাগ কাজের দায়িত্ব দিয়ে বসে আছেন। শশুড়বাড়ি গিয়েও টিকতে পারেন না। মেয়েটা হওয়ার সময় ওর জীবন মৃত্যুর আশংকা তৈরি হয়। তখন তওবা করেন আমেনা। যা খুশি তাই হোক, মেয়েটা তার বাঁচুক। ফুটফুটে ফাতিমা জন্মালো। রিযিক নিয়েই এসেছে মেয়েটা। ওর বাবারও একটা চাকরি হলো। আগের থেকে ভালো বেতন। ওরা আবার ঢাকা ফিরলো।

সংসার কোনো রকম চলে যাচ্ছে। স্বামীর পকেট থেকে অল্প কিছু টাকা সরিয়ে রাখেন তিনি। দেলোয়ার হোসেন বুঝেও না বুঝার ভান করেন। এভাবে যা জমান সংসারের নানা প্রয়োজনে আবার বের করে দেন। তখন একটু মিথ্যার আশ্রয় নেন। বলেন, “অমুকের টাকা , তমুকের থেকে নিলাম। ফেরত দিতে হবে কিন্তু”। এই একটা মিথ্যাই তিনি বলেন। আল্লাহ্‌র কাছে মাফও চান এর জন্যে।

স্বামীকে বলেও রেখেছেন, “শোনো, হয়তো টাকা পয়সা নিয়ে কিছু মিথ্যা তোমার সাথে বলতে পারি। আর কোনো মিথ্যা কিন্তু বলি না”। দেলোয়ার হোসেন হাসেন মিটিমিটি, কিছু বলেন না। এই টাকাগুলো যে বিপদে আপদে কত কাজে লেগেছিল। বাড়ি যাওয়ার সময় একবার পরিচিত গাড়ি দেখে উঠে পড়েন তার স্বামী। টিকেট কাটেন নি, ভাড়া পরে দিবেন। বললেও বাসের সুপারভাইজার কেমন করতে থাকে। তখন আঁচল থেকে টাকা বের করে দিয়ে অসম্মান থেকে নিস্তার পাওয়া গিয়েছিল। মানুষটার কবে আক্কেল হবে বোঝেন না আমেনা বেগম।

ফ্রিজ একটা কেনা হয়েছিল, সেকেন্ড হ্যান্ড। এক বছর যেতেই নষ্ট। ঠিক করাতে যা লাগবে তার চেয়ে কেনাই ভালো। ছেলে মেয়ে কিছু চাইলে না করতে খুব খারাপ লাগে। আবারো কেনার ইচ্ছা আছে আল্লাহ তৌফিক দিলে। সংসারে অভাব থাকলেও শান্তিটা আমেনা বেগমও বুঝতে পারেন। ছেলেমেয়ের ঝগড়াঝাটি নেই, অযথা দুশ্চিন্তা নেই। আলহামদুলিল্লাহ! আর কি লাগে!

“আপু আমার মাথা থেকে যদি তোমরা একটা উকুন আনতে পারো তাহলে সুন্দর একটা কলম কিনে দিবো।“

“তোমার মাথায় কোনো উকুন নেই ভাইয়া”। ফাতিমা বিরক্ত হয়ে বলে।

কিন্তু সুন্দর কলম উপহার পাওয়ার আশায় ফাতিমা আর খাদিজা দুই দিক থেকে বিলি কাটতে থাকে। এর আগে ভাই একটা অদ্ভুত কলম দিয়েছিল। গোল বলের মতো দেখতে। টিফিনের টাকা জমিয়ে ছোট দুই বোনকে কিছু দিতে আব্দুল্লাহ্‌র ভালোই লাগে। মারঈয়াম ওদের জন্যে আচার বা পাঁচ টাকার কোণ আনে। আর আব্দুল্লাহ আনে ব্যতিক্রমী কিছু। ওরা দুইজন অবশ্য সবটাতেই খুশি।

ইফতার তৈরি করতে করতে ঘর্মাক্ত আমেনা বেগম রান্না ঘর থেকে আসেন।

“আম্মু! বসো! বাতাস করি”। লাফ দিয়ে উঠে বসে ছেলে। হাত পাখা দিয়ে সর্বোচ্চ শক্তিতে বাতাস করতে থাকে। রোযায় যেন লোডশেডিং এর ভোগান্তি আরো বেড়ে গেছে।

মারঈয়ামকেও ডাকে আমেনা বেগম। পেঁয়াজুর ডাল মাখা হাতটা ধুয়ে তাড়াতাড়ি আসে ও। বিড়ালের বাচ্চার মতো চারজন মা এর কাছে শুয়ে বসে থাকে।

“এবার কিন্তু ঈদের ড্রেস হবে না তোমাদের। তোমার বাবা ঈদের বোনাস পায়নি। অফিসে কি সমস্যা।“

“সমস্যা নাই আম্মু। ঈদে একটু ভালো রান্না করো তাতেই হবে। গতবছর ঈদে ছোট চাচা যে পাঞ্জাবীটা দিলেন ওটা তো পরি নাই বেশি একটা”। আব্দুল্লাহ মাকে স্বস্তি দেয়ার চেষ্টা করলো।

“ফাতিমা, খাদিজাও কি জামা পাবে না?” হতাশ হয়ে জিজ্ঞেস করল মারঈয়াম।

“দেখি”।

এই ‘দেখি’ শব্দটা আশা-নিরাশার মাঝামাঝি ঝুলিয়ে দেয়। মারঈয়ামের মা বাবার সবচেয়ে প্রিয় শব্দ মনে হয় এটা। সন্তানকে পুরোপুরি নিরাশ না করে একটা কিছু বুঝ দেয়া।

মা এর থেকে টাকা নিয়ে মারঈয়াম বের হয়েছে কাছে কাপড়ের দোকানটার উদ্দেশ্যে। গজ কাপড় কিনবে সে। নিজের জন্য না। ছোট দুই বোনের জন্য। বোন দুইটা তার জমজের মতো। ঘন্টায় ঘন্টায় আড়ি আর ভাব নেয় একজন আরেকজনের সাথে। চোখের মণির সাদা অংশটুকু এতো সাদা, মনে হয় নীল দিয়ে ধোঁয়া। পুতুল-পুতুল লাগে মারঈয়ামের।

নিজের ঈদের জামা নিয়ে ওর কোনো চিন্তা নেই। ঈদের জামা এমন কোনো জরুরি বিষয় না। ক্লাস ফোরে স্কুল ছেড়ে দিয়ে নানাবাড়িতে যে কয়মাস ছিল সে কথা মনে পড়লে আল্লাহ্‌র দেয়া সব নিয়ামতের কথা মনে পড়ে যায় ওর। নানা নানী পারেনি দূর দূর করতে। মামাতো ভাই বোনরা বেড়াতে আসলে এক সাথে খেতে বসে প্লেটের খাবারের পার্থক্য দেখে অনেক কিছু বুঝে নিত ছোট্ট মারঈয়াম।

যে খালা এতো আদর করতো সে পর্যন্ত একদিন বলে বসল, “দুলাভাই এর কিছু একটা হলে সবগুলা তো আব্বার ঘাড়ে পড়বে”। ফাতিমা হওয়ার পর চলে আসতে পেরেছিল শান্তি। এই আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা হলে যতই আদর করে কথা বলুক, সেই সময়গুলোর কথা মনে পড়ে যায়। বন্ধুদের মামা চাচারা স্কুলে নিতে আসলে অবাক লাগে ওর। মনে হয় এই দুনিয়ায়ও এমন হয় নাকি, মামা –চাচারা এমন আদর করে। হয়, যারা আর্থিক দিক দিয়ে স্বচ্ছল তাদের হয়তো এমন হয়।

নীলের উপর লাল লাল ফুল প্রিন্টের একটা কাপড় কিনে। সাথে লাল কাপড় নেয় আলাদা, পাইপিং আর কলারের জন্যে। মা কেটে দেয়, মারঈয়াম সেলাই করতে বসে। ঈদের দুইদিন আগে ফ্রক রেডি। ফাতিমা আর খাদিজাকে ডাকে।

“আপুরা, পরো দেখি, কেমন লাগে”।

নতুন জামা হাতে পেয়ে খুশি হয় দুইজন। রুমের সবাইকে বলে, “এই তোমরা চোখ বন্ধ করো। কেউ দেখবা না। আমরা জামা পরবো”।

জামা পালটে সবাইকে দেখায় দুই বোন। বাবা মা ভাই সবার মতামত চাই। “কেমন লাগছে?”

লাল কলারের জন্যে ওদের গালে লাল রঙের শেড পড়েছে। মারঈয়াম আগেই খেয়াল করেছে ওর দুই বোন যে জামাই পড়ে সেই রঙের শেড পড়ে ওদের গালে। আসমাকে মিথ্যা বলেনি সে। ওর ঈদের জামার সংখ্যা দুই-ই। আশা ছিল, ওর জামা না হলেও ছোট দুইজনের জন্যে আদায় করে নিতে পারবে। ওদের খুশিতেই মারঈয়ামের ঈদ আনন্দ। আল্‌হামদুলিল্লাহ!

———————
ঈদ আনন্দ

উম্মে লিলি

জুন ১৬, ২০১৮ইং